May 2, 2024, 5:21 am

শিশুদের খতনা নিয়ে তাদের পরিবার শঙ্কিত : হানিফ

সুন্নাতে খতনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যুতে তাদের পরিবার শঙ্কিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন সফল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের বিচক্ষণতা, প্রজ্ঞ, মেধা ও দক্ষতার কারণে। উন্নয়ন আমাদের যথেষ্ট হয়েছে, এখন প্রয়োজন এই উন্নয়ন ধরে রাখা। উন্নয়ন ধরে রাখা এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই উন্নয়নকে ধরে রাখার জন্য সরকারের সামনে, দেশের সামনে সবচেয়ে বড় সমস্যা, জাতির সমস্যা হলো আমাদের মানুষের সততা, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের দিকে জাতি চলে যাচ্ছে। এখান থেকে যদি বের হয়ে আসতে না পারি তাহলে এই উন্নয়ন কিন্তু ধরে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে বা কিছু দিন ধরে আপানারা দেখেছেন দুই দুইজন শিশু, আইমান এবং আইয়ান খতনা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। কয়েক দিন আগে আরেক শিশু এই অবস্থায় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে মৃত্যু ঝুঁকিতে ছিল। আমরা লক্ষ্য করছি যে শিশুর খতনার বিষয়ে তাদের পরিবার শঙ্কিত। এই যে চিকিৎসকদের গাফিলতির কারণে এই দুই শিশু প্রাণ হারালো, যেটা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। এ অবস্থা কেন হয়েছে, এক্ষেত্রে জাতি অবাক হলেও আমি কিন্তু খুব একটা বিস্মিত হইনি। চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের যখন শীর্ষ কর্ণধারকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখালেখি হয়, তার অনৈতিকতা, স্বজনপ্রীতি নিয়ে, নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে নানান ধরনের লেখালেখি হয়। তখন কিন্তু চিকিৎসার ওপরের মানুষের আস্থাটা আস্তে আস্তে কমে যায়। ওই চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপরে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।’
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘এ ধরনের শীর্ষ পর্যায়ে লক্ষ্য করে দেখুন আজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ যে পদ উপাচার্য সেই উপাচার্যের বিষয়ে কিন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য চলে আসছে। কেউ স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িত, কেউ নানান অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। এমন কি অনেক উপাচার্যের অডিও রেকর্ডও চলে আসছে গণমাধ্যমে, যারা যারা নিয়োগের জন্য সরাসরি প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন আর্থিক সুবিধা নেওয়া জন্য। এটাই যদি সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যলয়ের সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে হয় তাহলে সেই জাতির ভবিষ্যত নিয়ে, তার নীতি-নৈতিকতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা ছাড়া কিছুই থাকে না। গ্রিক দর্শনিক প্লেটো এক উক্তিতে বলেছিলেন, একটি দেশের মানুস যেমন হবে রাষ্ট্র তেমনি হবে। মানুষের চরিত্র দিয়েই রাষ্ট্র গঠিত হয়। আজ আমাদের শিক্ষিত ও সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের যদি এই অবস্থা হয়, তাদের যদি এই মূল্যবোধ হয়- তাহলে সেক্ষেত্রে এই রাষ্ট্রের চরিত্র আস্তে আস্তে অবক্ষয়ের দিকে যাবে এটাই স্বাভাবিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন, অগ্রগতি করেছেন। এই উন্নয়ন অগ্রগতি ধরে রাখার জন্য এখন দরকার আমাদের এই সমাজের যে নীতি-নৈতিকতা, সততার যে অবক্ষয়ের মধ্যে যাচ্ছে- সেটাকে কীভাবে আবার আমরা ফিরিয়ে আনতে পারি, মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে পারি সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন। আশা করি এই ব্যাপারে সরকার উদ্যোগ নেবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :